Reading Time: 7 minutes

কেউ কি কখনো ভেবে দেখেছিলেন এই ইন্টারনেটের আগমন যদি এ বিশ্বে না হতো তাহলে কেমন হতো? কেমন ছিল ইন্টারনেটের পূর্ব দুনিয়া? মানুষের সঙ্গে বিশ্বকে সংযুক্ত করার মত এক বিশাল মাধ্যম সৃষ্টি করার বিষয়টি যদি কারো মাথায় না আসতো, তাহলে আমরা হয়তো এই ইন্টারনেট জগতের ছোয়া পেতাম না। নতুন এই জগত যেভাবে মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে তা একসময় ছিল মানুষের কল্পনার বাইরে। বিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা হাজার মানুষের সাথে যোগাযোগ, হাজার অজানা তথ্য সম্পর্কে জানা, যা সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। ইন্টারনেটকে বর্তমানে বিশ্বের যুগান্তকারী উদ্ভাবন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ইন্টারনেট সৃষ্টির সূচনা

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা www ছিল আবিষ্কারের ইতিহাসে যুগান্তকারী এক উদ্ভাবন, যা বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের ক্ষেত্রে ও মানুষের বর্তমান জীবনধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিল।  যোগাযোগের এই ইতিহাস সৃষ্টিকারী জগত ব্রিটেনের এক তরুণ কম্পিউটার বিজ্ঞানী টিম বার্নাস-লি ১৯৮৯ সালে একটি টিম তৈরি করেন। টিম বার্নাস-লি চেয়েছিলেন এমন একটা মাধ্যম সৃষ্টি করতে যা বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষকে সংযুক্ত করবে। ইউরোপের বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র সার্নে টিম বার্নাস লি-র সঙ্গে কাজ করতেন তার দুই সহকর্মী বিজ্ঞানী বেন সিগাল আর জঁন ফ্রসোয়াঁ গ্রথ, যারা তার আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করেন।

বার্নাস-লি বলেন এ এক নতুন যোগাযোগ মাধ্যম, যে মাধ্যম মানুষকে আরও কার্যকরভাবে তার কাজ করার সুযোগ করে দেবে, যে মাধ্যমের অবাধ তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের জন্য মানুষকে কোন ভৌগলিক সীমারেখা মানতে হবে না। তার এই সৃষ্টি ছাপখানা আবিষ্কারের মতই বৈপ্লবিক ছিল। টিমের এক সহকর্মী বেন সিগাল বিবিসিকে বলেন, টিমের লোকেরা যে কাজ করেছিলেন তা আগে কেউ করেনি। এটা ছিল এক ব্যক্তির একক ভাবনা, মহান এক সৃষ্টি। তার আরেক সহকর্মী বিজ্ঞানী জঁন ফ্রসোয়াঁ গ্রথ বিবিসিকে জানায় যে টিমের ছিল ভিশন এবং সেই ভিশনকে বাস্তবে রূপ দেবার ক্ষমতা যে দুয়ের সমন্বয় খুবই বিরল।

মি. বার্নাস লি বলেছিলেন তার আশা এই আবিষ্কার খুবই ইতিবাচক একটা জগত তৈরি করবে। এই গ্রহের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মানুষকে এটা একত্রিত করবে, কারণ এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে ভার্চুয়াল জগতে যোগাযোগ সম্ভব হবে। টিম বার্নাস-লি যখন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আবিষ্কার করেন, তখন কিন্তু তিনি ছিলেন জেনিভায় সার্নে কর্মরত অতি সাদামাটা একজন বিজ্ঞানী। তিরিশের ওপর বয়স, চুপচাপ প্রকৃতির লোক ছিলেন তিনি। যাকে দেখে মনেই হতো না তার ভেতরে যে এত বড় এক প্রতিভা লুকিয়ে আছে। তার ভাবনাও কতটা দীর্ঘ ছিল সেটিও কেউ তখন উপলব্ধি করতে পারেনি।

পৃথিবীর বিখ্যাত বড় বড় সব পদার্থবিদরা যাদের গবেষণার বিষয়বস্তু হচ্ছে বিজ্ঞানের জগতের বিশাল বিশাল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা। সার্নে কাজ করতো এমন কিছু বিজ্ঞানী। সার্ন জেনিভায় ইউরোপের পরমাণু গবেষণার মূল কেন্দ্র। এই পদার্থবিদদের কাজে প্রযুক্তিগত সাহায্যের জন্য নিয়োগ করা হয় কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের, যাদের ভূমিকা হল প্রয়োজনে হাজির থাকা। জঁন ফ্রসোয়াঁ বলেন কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা সেখানে অনেকটা পাইপ লাইনে কাজ করা মিস্ত্রিদের মত। তাদের দরকার আছে, কিন্তু বড় বড় গবেষণার কাজে তারা অত্যাবশ্যক নয়। কেবলমাত্র অতি দরকারেই তাদের ডাক পড়ে।

তারাও সেখানে এরকমই বিজ্ঞানী ছিলেন, কেবল দরকারেই হাজির হতেন। তবে তিনি বলেন, নতুন ও উন্নত উপায়ে তথ্য সরবরাহের প্রযুক্তি খোঁজাও ছিল তাদের অন্যতম একটা কাজ। টিম বার্নাস-লি বিজ্ঞানীদের জন্য তথ্য প্রবাহের মাধ্যম উদ্ভাবকদের দলটির বৈপ্লবিক কাজে নেতৃত্ব দিতেন। টিম ১৯৮৯ সালে সার্নে তার বসের কাছে নতুন এক প্রস্তাব নিয়ে হাজির হলেন। বেন সিগাল বলেন প্রস্তাবটা ছিল একেবারে অভাবনীয়- আসল কাজের সঙ্গে এর কোনই যোগাযোগ ছিল না। তিনি যে ছবিটা হাজির করলেন তা আজকের দিনে এই জগতের খুবই পরিচিত একটা ছবি।

তার ভাবনায় ছিল অনেকগুলো স্তরের হলোগ্রাফিক ছবি- তার সঙ্গে বহুমাত্রিক জটিল ব্যাখ্যা ও যুক্তি। টিমের মাথার ভেতর চিন্তাভাবনা ওভাবেই কাজ করত। ছবিটা দেখে বোঝা সহজ ছিল না সে কী করতে চাইছে। সে প্রচলিত কায়দায় কোন প্রকল্পের রূপরেখার সারমর্ম নিয়ে হাজির হয়নি। সে তার স্বপ্নের ছবি এঁকেছিল। বেন সিগাল টিমের দলে সরাসরি কাজ করতেন না। কিন্তু টিমকে তিনি পছন্দ করতেন এবং তাকে সাহায্য করতেন ও পরামর্শ দিতেন।

বার্নাস-লি এর অঙ্কিত সেই ছবি

টিম বার্নাস-লি এর এই আবিষ্কারের পেছনে মূল অনুপ্রেরণা ছিল, সার্নে যেসব বিজ্ঞানী কাজ করছেন তাদের ভাবনা ও গবেষণার কাজ কীভাবে আরও কার্যকর উপায়ে আদানপ্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। তার সেই স্বপ্নটা ছিল গোটা বিশ্বকে দ্বিমুখী পথে, বহুমুখী পথে সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত করার একটা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। তিনি প্রস্তাব দিলেন বাজারে যে প্রযুক্তি রয়েছে তা ব্যবহার করেই এমন একটা ভার্চুয়াল জগত তৈরি করা সম্ভব যেখানে সকলেই তথ্য শেয়ার করতে পারবে, তথ্য সহজেই আদানপ্রদান করতে পারবে। তিনি বললেন এর মূল ভিত্তি হবে ইন্টারনেট।

আর এই ইন্টারনেট ব্যবহার করেই আলাদা আলাদা কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। তখন ইন্টারনেট চালু হয়ে গেছে দুই দশক ধরে। কিন্তু ইন্টারনেটের ব্যবহার তখনও জটিল পর্যায়ে, সেখানে কিছু খুঁজে পেতে সময় লাগে অনেক এবং খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। সমস্যার সমাধান করতে টিম বার্নাস-লি দুটি প্রযুক্তিকে একসাথে জুড়লেন -ইন্টারনেটের সঙ্গে হাইপারটেক্সট। তিনি দেখলেন ইন্টারনেটের সঙ্গে হাইপারটেক্সট ব্যবহার করলে একটি ডকুমেন্টের সঙ্গে আরেকটি ডকুমেন্টকে সংযুক্ত করা যায় এবং ভার্চুয়াল জগতে একটি একক নথি তৈরি করা যায়।

আর ব্রাউজার ব্যবহার করে পৃথিবীর যে কোন জায়গা থেকে সেই নথি দেখা যায়, পড়া যায়। তার এই ভিশন থেকেই শুরু হল ইন্টারনেট দুনিয়ায় এক বিপ্লবের পদচারণা। বার্নাস লি বললেন বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য একটা ওয়েবে নিয়ে আসা হবে। যেসব তথ্য ইতোমধ্যেই লেখা হয়েছে, তৈরি রয়েছে, ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে সেগুলো ইন্টারনেট আর হাইপারটেক্সট প্রযুক্তি এনে দেবে একটা জায়গায়। কিন্তু টিমের এই প্রস্তাব তার বস আনুষ্ঠানিকভাবে নাকচ করে দিয়েছিলেন। যদিও একইসাথে টিমকে তিনি অনুমতি দিলেন তার আইডিয়া নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে, কাজ করার জন্য সুযোগ সুবিধাও তৈরি করে দিলেন।

কিন্তু কোনো গবেষণা, যার সাথে পদার্থবিদ্যার কোন যোগসূত্র নেই তার জন্য আলাদাভাবে তহবিল অনুমোদন করার এখতিয়ার সার্নের ছিল না। ফলে টিমের গবেষণার কাজ চলতে লাগল গোপনে – আড়ালে, মাটির নিচের ঘরে। কম্পিউটার প্রযুক্তি নিয়েও গবেষণার কিছু কাজ হতো সার্নে। কারণ পদার্থবিদ্যার কাজে সাহায্য করার জন্য কম্পিউটার প্রযুক্তির দরকার হতো।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর সূচনা

বেন সিগাল টিম বার্নাস-লির বসকে গিয়ে বোঝালেন যে টিমের জন্য দরকার একটা বিশেষ ধরনের কম্পিউটার – নেক্সট কম্পিউটার। অ্যাপল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস যার উদ্ভাবক ছিলেন। সার্নে সেই কম্পিউটার ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসে পৌঁছায়। ওই কয়েক মাসের মধ্যে টিম সৃষ্টি করলেন যা আজ পরিচিত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নামে – www। বেন সিগাল বলেন দারুণ উত্তেজিত টিম বার্নাস লি ডিসেম্বরে ক্রিসমাসের মধ্যেই সেই কম্পিউটারে পুরোপুরি কাজ শুরু করে দেয়। সার্ভার, ব্রাউজার যাবতীয় কাজ সে রীতিমত হাতের মুঠোয় এনে ফেলে।

তখন তার মনে হচ্ছিল সে আইনস্টাইনের মাপের কাজ করে ফেলেছে। জঁন ফ্রসোয়াঁ গ্রথ সেসময় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বেন সিগালের মনে হয়েছিল এই তরুণ শিক্ষার্থী টিমকে সাহায্য করার উপযুক্ত। জঁন এর মতে তার পেছনে সম্ভবত ঈশ্বরের হাত ছিল। কারণ হিসেবে বলেন, মাত্র তার আগের বছরই একটা বিশেষ ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর কাজ রপ্ত করেছিলেন আর ওই প্রোগ্রামিং সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। টিমের ঠিক ওই প্রোগ্রামিং জানা লোকেরই তখন দরকার ছিল। বার্নাস লি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আবিষ্কার করার আগে সার্নের এই বিজ্ঞানীরা আলাদা আলাদাভাবে অনেকগুলো কম্পিউটার ব্যবহার করতেন তাদের কাজ অন্যদের কাছে তুলে ধরার জন্য।

কীভাবে এ কাজ হতো তা ২০০৫ সালে বিবিসির কাছে সার্নের একজন বিজ্ঞানী ব্যাখ্যা করেছিলেন, যিনি ৮০র দশকের শেষ দিকে সার্নে কাজ করতেন। তিনি বলেন সেখানে তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় সৃজনশীল বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। প্রত্যেকেই তাদের কাজের জন্য ব্যবহার করতেন তাদের নিজস্ব ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কম্পিউটার, ভিন্ন ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম, তথ্য পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন ধাঁচের ফরম্যাট। ফলে কোনো একটা গবেষণা সম্পর্কে জানতে হলে খণ্ড খণ্ড ভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে হতো।

একটা কম্পিউটার খুলে সেই কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে তা বুঝে নিয়ে তথ্য বের করে তা কাগজে লিখে নেয়া হতো। এরপর বাকি তথ্যের জন্য যেতে হত আরেকটা কম্পিউটারে, সেখান থেকে তথ্য নিয়ে আবার আরেকটা কম্পিউটারে। ব্যাপারটা ছিল সময়সাপেক্ষ আর জটিল। সকলের ব্যবহার উপযোগী একটা জায়গায় আইডিয়া শেয়ার করার কোন পদ্ধতি বা সুযোগ আমাদের ছিল না। টিম বানার্স লি এই সুযোগ এনে দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নামের উৎপত্তি যেখান থেকে

এর কয়েক বছরের মধ্যেই এই প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা পায় বিশ্ব জুড়ে- বদলে দেয় মানুষের জীবন- তৈরি হয় আজকের ওয়েব নির্ভর দুনিয়া। বেন সিগাল বলেছেন প্রথমে ভাবা হয়েছিল অন্য একটি নাম ইনফরমেশন মেশ বা তথ্যজাল। কিন্তু পরে সেটা বাতিল হয়ে যায়। টিমের নিজের নামে ওয়েবের নাম ‘টিম’ রাখার কথাও ভাবা হয়েছিল। কিন্তু টিমের পছন্দ হয়নি। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নামটি তারই দেয়া। এটাই তার সবচেয়ে পছন্দ ছিল বলে জানান বেন সিগাল। টিম বার্নাস লি তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কার থেকে এক পয়সা উপার্জনের প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যন করেন।

তিনি বলেন তার এই উদ্ভাবন ছিল মানুষের হাতে অবাধ তথ্যভাণ্ডার সহজে ও বিনা খরচায় পৌঁছে দেবার জন্য। তিনি কোন লাভের আশায় এই কাজ করেননি। তিনি ১৯৯৪ সালে আমেরিকায় চলে যান এবং উন্মুক্ত ওয়েবের ব্যবহার নিয়ে আরও কাজ করেন। জঁন ফ্রসোয়াঁ গ্রথও সারা জীবন ওয়েব নিয়ে কাজ করে গেছেন আর ড. বেন সিগালের কর্মক্ষেত্রও ছিল ইউরোপে ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ে।

তথ্য অনুসন্ধানের নতুন পথ আবিষ্কার

টিমের ছোট দলটি তিন ধরনের নতুন প্রযুক্তি তৈরি করে- html, url এবং http। টিম বার্নাস-লি তার এই আবিষ্কার ১৯৯১ সালের অগাস্ট মাসে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। এই তিন প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর সর্বত্র কম্পিউটারগুলো নিজেদের মধ্যে কথা বলতে সক্ষম হয়। বিশ্বের প্রথম ওয়েবসাইট (ifo.sern.ch) উদ্ভাবনের খবর ছড়িয়ে যায় সার্ন সংস্থার বাইরে সারা বিশ্বে। সার্নের ভেতরে যদিও তেমন একটা উৎসাহ দেখা যায়নি। এর অল্পদিনের মধ্যেই একটা উৎসাহী ওয়েব গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যায়। বেন সিগাল বলেন সার্নের বাইরের দুনিয়া থেকে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে তৈরি হয় বিপুলর আগ্রহ।

প্রথম থেকেই টিম বার্নাস-লি এবং তার সহকর্মীরা চেয়েছিলেন এই ওয়েব হবে উন্মুক্ত এবং বিনামূল্যে তা ব্যবহার করা যাবে। সার্নের ব্যবস্থাপনা মহলকে অবশ্য এ বিষয়ে রাজি করাতে কিছু বেগ পেতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯৯৩ সালে সার্ন একটি আইনি দলিলে সই করে যাতে বলা হয় এই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব পৃথিবীর সর্বত্র সকলে বিনা খরচায় ব্যবহার করতে পারবে। এই দলিলটি ছিল বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সবচেয়ে মূল্যবান একটি দলিল।

উপসংহার

ইন্টারনেটের মত এই যুগান্তকারী সৃষ্টির বদৌলতে বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। দূর-দূরান্ত থেকে আদান প্রদান সহ, ভৌগলিক অবস্থা, স্বাস্থ্য তথ্য, শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের অবদান এখন অনস্বীকার্য। বর্তমান যুগে প্রযুক্তি এখন বহুদূর এগিয়ে। ৪জি, ৫জি গতি এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের কারনে ইন্টারনেট গতি এখন বহুগুণে বেড়ে গেছে। যে সব কাজ করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো তা ইন্টারনেটের কারনে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এক দেশ থেকে আরে দেশে বাইরে যারা ঘরে ব্যবসায়িক কার্য পরিচালনা করছে, তাদের সহযোগিতার মূল উৎস বর্তমানে এই ইন্টারনেট।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের এই অশেষ অবদান বলে শেষ করা যাবে না।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.