২০২০ সালে জুন মাসে এক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন যে গুগলের ক্রোম ব্রাউজার প্রাইভেট মোডে থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীর কর্মকাণ্ডের উপর নজর রেখে বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে ব্যবহারকারী ক্রোম ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড ব্যবহারের সময় গুগল বেআইনিভাবে ব্যবহারকারীর কর্মকাণ্ডের উপর নজর রাখে এমন অভিযোগে মামলা করেছিলেন। এরপর আদালত ওই মামলার বাদীপক্ষ অ্যালফাবেট প্রধান সুন্দর পিচাইকে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা পর্যন্ত জেরা করতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে যে আদালতের নথি অনুযায়ী, গুগলের ইনকগনিটো ব্রাউজিং মোডকে প্রাইভেট বলে প্রচারণার চালানোর ফলে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে বলে পিচাইকে ২০১৯ সালেই সতর্ক করা হয়েছিল। তারপরও ওই প্রচারণা অব্যাহত ছিল, কারণ পিচাই চাননি ফিচারটি নিয়ে বেশি উচ্চবাচ্য হোক। বাদীপক্ষের দাবি, অ্যাল্ফাবেট প্রধান সুন্দর পিচাই ক্রোম ব্রাউজার এবং ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন প্রসঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কিছু বিষয়ে অবহিত ছিলেন। তাই পিচাই-কে আদালতের সামনে জেরা করার সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছিলেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা, আর তাতেই ক্যালিফোর্নিয়ার আদালত সায় দিয়েছে।
তবে বাদীপক্ষের এই অনুরোধে গুগল অনেকটাই আপত্তি করেছিল। গুগল এই অনুরোধে মোটেই খুশি নয়। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হোজে কাস্টানেডা রয়টার্সের কাছে উক্ত অনুরোধকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন। কাস্টানেডা বলেন যে মামলার অভিযোগগুলোর তীব্র বিরোধীতা করলেও তারা বাদীপক্ষের অসংখ্য অনুরোধে সহযোগিতা করেছে। তিনি যে দৃঢ় ভাবে নিজেদের রক্ষা করে যাবেন বলে জানান। ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে মামলার শুনানিতে বিচারক সুজান ভ্যাল কিউলেন বলেন যে কিছু নথিপত্র এটা প্রমাণ করছে যে, নির্দিষ্ট এবং সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য পিচাইকে জানানো হয়েছিল এবং সম্ভবত পিচাইয়ের কাছ থেকে অনুমোদন এসেছিল।
আর সে কারণেই বিচারক বাদীপক্ষের আইনজীবীদের পিচাইকে প্রশ্ন করার অনুরোধে সায় মত দিয়েছেন। মামলার অভিযোগের বিপরীতে গুগল দাবি করছে যে ইনকগনিটো মোড কেবল ব্যবহারকারীর নিজস্ব ডিভাইসে ডেটা জমা রাখা বন্ধ করে এই বিষয়টি তারা আগেই পরিষ্কার করে বলেছে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গুগল ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রশ্নে নিজস্ব কর্মকাণ্ড নিয়ে বাজারের নীতিনির্ধারক এবং আইনপ্রণেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, অনলাইন নজরদারি প্রসঙ্গে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে আশঙ্কা বেড়েছে।
রয়টার্স মন্তব্য করেছে যে বিশ্বের শীর্ষ সার্চ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুগল দৃঢ়তার সঙ্গে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।