Reading Time: 2 minutes

এটাই হতে পারে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তথ্য চুরির ঘটনা। তবে চলতি সপ্তাহে আরও কিছু নাটকীয় ঘটনা দেখা গেছে।

অস্ট্রেলিয়ায় এবার ঘটেছে বিশাল ধরনের সাইবার হামলার ঘটনা। প্রায় এক কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়েছে বলে গত সপ্তাহে জানতে পেরেছে দেশটির টেলিকমিউনিকেশন খাতের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান অপটাস। মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির এই ঘটনাকে প্রতিষ্ঠানটি ‌‘সাইবার হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। খবর বিবিসির।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, এটাই হতে পারে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তথ্য চুরির ঘটনা। তবে চলতি সপ্তাহে আরও কিছু নাটকীয় ঘটনা দেখা গেছে। এর মধ্যে আছে মুক্তিপণের হুমকি, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং এটি হ্যাকের ঘটনা কি না তা যাচাই করা।

এটা একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উস্কে দিয়েছে যে, অস্ট্রেলিয়া কীভাবে ব্যক্তিগত তথ্য ও প্রাইভেসির বিষয়টি দেখভাল করে। অপটাস সিঙ্গাপুর টেলিকমিউনিকেশন লিঃ-এর একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান। তারা ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর প্রকাশ করেছে যে নেটওয়ার্কে সন্দেহভাজন কার্যক্রমের বিষয়টি তাদের দৃষ্টিতে এসেছে।

অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বড় সাইবার হামলা

অস্ট্রেলিয়ার টেলিকম খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই প্রতিষ্ঠান জানায় যে, তাদের সাবেক ও বর্তমান গ্রাহকদের তথ্য চুরি হয়েছে। এর মধ্যে আছে নাম, জন্মতারিখ, ফোন নাম্বার, ই-মেইল আইডি, পাসপোর্ট নাম্বার এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার।

তবে তারা দাবি করেছে যে, পেমেন্ট বিষয়ক তথ্যাদি ও অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়নি। সরকার বলছে, যাদের পাসপোর্ট বা লাইসেন্স নাম্বার চুরি হয়েছে তাদের আইডেন্টিটি চুরি বা প্রতারণার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই সংখ্যা প্রায় ২৮ লাখ।

অপটাস বলছে, তারা ঘটনাটির তদন্ত করছে এবং পুলিশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ বিষয়টি জানিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এতো বড় চুরির ঘটনাটি দেশের বাইরে থেকে সংঘটিত হয়েছে।

ঘটনার জন্য আবেগময় ভাষায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন অপটাসের প্রধান নির্বাহী কেলি বায়ের রোজমারিন। তিনি একে ‘নিখুঁত হামলা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন যে, তার কোম্পানির সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই শক্তিশালী।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অবশ্যই আমি ক্ষুব্ধ যে একদল ব্যক্তি আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে এটা করতে চেয়েছে এবং আমি হতাশ কারণ আমরা সেটা ঠেকাতে পারিনি।

এর আগে শনিবার একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একটি অনলাইন ফোরামে কিছু নমুনা প্রকাশ করেন এবং অপটাস থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এক মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেন। কোম্পানিটিকে এটি পরিশোধের জন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তা না হলে চুরি করা তথ্য বিক্রির হুমকি দেওয়া হয়।

তদন্তকারীরা এখনো ওই ব্যক্তির দাবির বিষয়টি যাচাই করতে পারেনি। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন যে, প্রকাশিত নমুনার কিছু তাদের কাছে সত্যি মনে হয়েছে। সিডনিভিত্তিক টেক রিপোর্টার জেরেমি কির্ক কথিত সেই হ্যাকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি তাকে কীভাবে তথ্য চুরি করা হয়েছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে।

তিনি অপটাসের দাবির সঙ্গে একমত হননি। তিনি বলছেন, হ্যাকাররা বিনামূল্যে প্রবেশ করা যায় এমন একটি সফটওয়্যার ইন্টারফেস থেকে তথ্য নিয়েছে।

মঙ্গলবার নিজেকে হ্যাকার হিসেবে দাবি করা এক ব্যক্তি ১০ হাজার গ্রাহকের রেকর্ড ফাঁস করেন এবং তার আগে দাবি করা মুক্তিপণের ডেডলাইন পুনরায় মনে করিয়ে দেন।

কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি আবার দুঃখ প্রকাশ করেন বলেন, এটা একটা ভুল বা মিসটেক ছিল এবং তিনি যেসব ডেটা ফাঁস করেছিলেন সেগুলো ডিলিট করে দেন।

গত সপ্তাহ থেকেই ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের একের পর এক বার্তায় ভেসে যাচ্ছে অপ্টাস। কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলাও হতে পারে। আইনজীবীদের প্রতিষ্ঠান স্ল্যাটার অ্যান্ড গর্ডন লইয়ার্সের বেন জোক্কো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা এবং যেভাবে ঘটনাটি প্রকাশিত হয়েছে তার প্রকৃতির দিক থেকে এটা সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক তথ্য চুরির ঘটনা।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.