ফেসবুক (মেটা) ও গুগলকে ৭১ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর নেপথ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীদের অনুমতি ব্যতীত বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার করার অভিযোগ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন ও অ্যান্টিট্রাস্টের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো গুগল ও মেটার একচেটিয়া বিজ্ঞাপননীতি ও অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা ব্যবহার নিয়ে নাখোশ। এ নিয়ে কয়েকটি দেশে মামলাও হয়েছে।
আজ বুধবার দেশটির ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন এ জরিমানা করে। দেশটিতে তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে এটাই সর্বোচ্চ জরিমানা।দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন বলেছে, তারা মার্কিন দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত করেছে। এতে দেখা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে গুগল ও মেটা। ব্যবহারকারীরা যেসব ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন, তা–ও পর্যবেক্ষণ করা হয়।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে গুগল ও মেটার তথ্য সংগ্রহ ও তা ব্যবহারের বিষয়টি ব্যবহারকারীকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয় না। এ কারণে গুগলকে ৪ কোটি ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার ও মেটাকে ২ কোটি ২১ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ৮২ শতাংশ গুগল ব্যবহারকারী ও ৯৮ শতাংশ মেটা ব্যবহারকারী কোনো কিছু না বুঝেই তাঁদের তথ্য অনলাইনে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়ে দেন।
গত বছর গুগলের বিরুদ্ধে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমস ও অ্যাপ মার্কেটের একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ে ১৮ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার তাই এর লাগাম টানতে চাইছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা দিয়ে গুগলকে ব্যাপক জরিমানা করেছে। তারা এখন অ্যাপল ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
এদিকে ইইউর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আদালত গুগলকে বিশাল অঙ্কের জরিমানা বহাল রেখেছেন। এক বিবৃতিতে ইইউ জেনারেল কোর্ট বলেছে, গুগল তাদের সার্চ ইঞ্জিনকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ডিভাইসের নির্মাতাদের ওপর বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপায়। তবে আদালত ৪৩০ কোটি মার্কিন ডলারের পরিবর্তে জরিমানা কিছুটা কমিয়ে ৪১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছেন। এ জরিমানার বিষয়টি কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ইউরোপে সর্বোচ্চ।
তবে গুগলের যুক্তি, কমিশনের মামলাটি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে। গুগলের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলকে সুবিধা দিতে ইইউ এ মামলা করেছে।